নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভুয়া যুগ্ন সচিব পরিচয়ে স্ত্রীর জন্য স্বর্ণ কিনে টাকা না দিয়ে উধাও হওয়া আরাফাত রহমান সাহেদকে গ্রেফতার করেছে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ। চাঁদপুর শহরের মহিলা কলেজ রোডের গোল্ডেন টাওয়ারে স্বর্ণ মহরা নামে জুয়েলারি দোকানে যুগ্ম সচিব পরিচয়ে ৪টি স্বর্ণের চেইন প্রতারণা করে পালিয়ে যান তিনি। বৃহস্পতিবার দুপুরে থানায় প্রতারণা মামলার পর এসআই স্বপন নন্দী ও ডিবির ওসি মজিবুর রহমান সঙ্গী ফোর্স নিয়ে ঢাকার উত্তরা অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া।
পুলিশ বলছে, উত্তরা পশ্চিম থানার ১২ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর রোডের প্রিয়াংকা হাউজিং সোসাইটির ৯ নম্বর বাসা থেকে আসামী আরাফাত রহমান সাহেদ (৫৫) কে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় তার বাসা তল্লাশি করে ৯ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা নগদ ও বেশ কয়েকটি মোবাইল সেট, আইডি কার্ড ও ভিজিটিং কার্ড সহ মালামাল উদ্ধার করে।
গ্রেপ্তার আসামী সাহেদ নোয়খালী জেলার সোনাইমুড়ী থানার ৭ নম্বর ইউনিয়নের বজরা গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে।
চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ জানায়, ব্যাংক ম্যানেজার মো. সাইফুল ইসলামের মোবাইলে প্রতারক সাহেদ তার নাম মো. জুলকার নয়ন এবং ব্যাংকের পরিচালক পরিচয় দেন।
মামলার বাদী সাইফুল ইসলাম অভিযোগে উল্লেখ করেন, আরাফাত রহমান পরিবারে চাঁদপুরে এক বিয়েতে অংশগ্রহণ করবেন এবং তিনি মৎস্য গবষেণা ইনস্টিটিউটের রেষ্ট হাউজে রয়েছেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে তাকে দাওয়াত দেন এবং অনুষ্ঠানে গেলে তাকে ডিসি এবং এসপির সাথে পরিচয় করিয়ে দিবেন।
তার স্ত্রীর কিছু স্বর্ণের গহনা কিনবে তার পরিচিত কোন জুয়ালারি দোকান আছে কিনা। তিনি সরল মনে ব্যাংকের গ্রাহক মোজাম্মেল হক ও স্বর্ণ মহরার স্বত্তাধিকারী মো. নাজির আহম্মেদ এর কাছ থেকে স্বর্ণ কেনার পরমার্শ দেন। এরপরই প্রতারক সাহেদ ওই দোকানে গিয়ে ৩ ভরি ৯.৫ আনা ওজনের ৫টি স্বর্ণের চেইন ক্রয় করেন এবং টাকা পরিশোধ করার জন্য তার ক্রেটিড কার্ড প্রদান করেন। ওই দোকানে ক্রেটিড কার্ড থেকে টাকা নেয়ার ব্যবস্থা না থাকায় দোকানের কর্মচারীকে তার গাড়ীতে করে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে নিয়ে যায়। ওই কর্মচারীকে সেখানে বসিয়ে রেখে কৌশলে গাড়ী নিয়ে পালিয়ে যান প্রতারক সাহেদ।
এই ঘটনায় মামলা করার পর তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) স্বপন নন্দী তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার এবং সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে প্রতারক সাহেদকে গ্রেফতার করে।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, ওই প্রতারক ব্যাক্তিকে গ্রেপ্তার করার পর তার দেয়া তথ্যে মামলার আলামত হিসেবে ৬টি অ্যান্ড্রয়েড ফোন, নগদ ৯লাখ ৮১ হাজার টাকা, বিজিটিং কার্ড, ব্যাংকের স্ট্যাটমেন্ট ও স্বর্ণের খালি বক্স জব্দ করা হয়। প্রতারণা করে নেয়া স্বর্ণের চেইনগুলো সে বিক্রি করে দেয়।
তিনি আরো জানান, প্রতারক শাহেদ নিজেকে যুগ্ন সচিব আবার কখনো ব্যাংকের পরিচালক পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে বিভিন্ন জেলা থেকে টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিয়েছে। তার বিরুদ্ধে চাঁদপুর ছাড়াও অন্য জেলায় মামলা হয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং ঘটনার সাথে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা এবং আসামীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে।